সবকিছুই সাধ্যের বাইরে, শিমের কেজি ২৮০; বেগুন ১৫০
টুইট ডেস্ক : আশ্বিনের মাঝামাঝি সময় পার হয়েছে। তাই রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারের শাক-সবজির দোকানে পাওয়া যাচ্ছে শীতকালীন আগাম সবজি। শিম, লাউ, মুলা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, গাজরসহ নানান বাহারি সবজির সমাহার রয়েছে অধিকাংশ দোকানে। তবে কোনটির দাম সাধারণ মানুষের নাগালে নেই। শীতের সবজি শিমের দাম দোকানভেদে চাওয়া হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি। ফুলকপি ৭০-৯০ টাকা এবং বাঁধাকপি ১০০-১১০ টাকা পিস দামে বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বারোমাসি অন্যান্য সবজির দামও।
বুধবার (২ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের আজমপুর কাঁচাবাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সবজির দোকানগুলোতে করলা, বেগুন, পটল, কাঁচা পেঁপে, শসা, বরবটি, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙ্গা, কচুর লতি, ঢেঁড়শ, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাক সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এছাড়া শীতের আগাম সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, শিম, লাউ, গাজর, শালগম, ধনেপাতাও বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে।
এসব সবজির অধিকাংশটির দামই শুরু হচ্ছে ৬০, ৭০, ৮০ ও ৯০ টাকায়। সর্বোচ্চ দাম হাঁকা হচ্ছে শিম, গাজর, বেগুনের। আকার ও মানভেদে ২৮০-৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম চাওয়া হচ্ছে প্রতি কেজি শিম। তাছাড়া নতুন ফুলকপি পিস ৭০-৯০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০-৭০ টাকা, করলা ৮০-৯০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ১৩০-১৫০ টাকা, শালগম ১০০-১১০ টাকা, মুলা ১০০-১৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫৫ টাকায়। পিছিয়ে নেই শসা, গাজরের দামও। দেশি শসা ৮০-৯০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০-৭০ টাকা এবং মানভেদে গাজর ১০০-১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
এছাড়া দেশি পেঁয়াজ ১১০-১২০ টাকা, আমদানি করা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, দেশি আদা ৫০০ টাকা, আমদানি করা আদা ২৮০-৩০০ টাকা, দেশি রসুন ২২০ টাকা, আমদানি করা রসুন (মানভেদে) ২০০ টাকা এবং শুকনা দেশি লাল মরিচ ৩৫০ টাকা, আমদানি করা শুকনা মরিচ ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
শাকের বাজারও দামে পিছিয়ে নেই। লাউশাক, পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক, কচু শাক সহ সবধরনের শাকের বাজারই চড়া। আঁটিপ্রতি লাউ শাক ৫০-৬০ টাকা, পুঁই শাক ৫০-৫৫ টাকা এবং পালং শাক, লাল শাক, কলমি শাক ও কচু শাক ৩০-৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আগাম সবজির বাড়তি দামের বিষয়ে বিক্রেতারা বলছেন, প্রায় এক মাস সবজির বাজার স্থিতিশীল থাকার পর এখন আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে। সামনের মাস থেকেই যখন সবজির পরিমাণ আরো বাড়বে তখন দাম কমে আসবে।
আব্বাস উদ্দিন নামের সবজি বিক্রেতা বলেন, এখন শীতের আগাম সবজি আসছে। শুরুতে আর শেষে এসব সবজির দাম বেশি থাকে। আর মাঝখানে কমে যায়। আর গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে হয়তো দাম আরো বেড়েছে।
বেগুনের বাড়তি দামের বিষয়ে জানতে চাইলে এই বিক্রেতা বলেন, কালো গোল বেগুন ১৫০ পাইকারি দামি চেয়েছে। সেজন্য আজকে আনি নাই। সাদা গোল বেগুন ১০০ টাকা পাইকারি দরে কিনতে পেরেছি। এখন এগুলো ১২০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে। আমরাও অনেক সময় নিরুপায় হয়ে যাই। পাইকারি দামই বেশি থাকে। আমাদের করার কিছু থাকে না।
নাঈমুল ইসলাম নামের আরেক সবজি বিক্রেতা বলেন, বছরের শেষ সময়ে সব ধরনের শাকসবজিই বাজারে আসে। এখন শাক সবজির কোন সংকট নেই। তবে দাম বেশি। আর কিছুদিন গেলেই দাম কমে আসার সম্ভবনা রয়েছে। কারণ, তখন সবজির পরিমাণ আরো বাড়বে।
অপরদিকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) প্রকাশিত নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারদরের ব্যাপারে কাওরান বাজার, মালিবাগ কাঁচা বাজার, মিরপুর ১ কাঁচাবাজার, রামপুরা বাজার, মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার, কচুক্ষেত বাজার থেকে সংগ্রহ করা তথ্য বলছে, সম্প্রতি চাল-মাঝারি (পাইজাম/লতা), চাল মোটা (স্বর্ণা/চায়না/ইরি), ময়দা (প্যাকেট), সয়াবিন তেল (লুজ), পাম অয়েল (লুজ), পাম অয়েল সুপার, ডাল (নেপালি), ছোলা (মানভেদে), রসুন (দেশি), হলুদ (আমদানি), দারুচিনি, ধনিয়া, তেজপাতা, রুই, মুরগি (ব্রয়লার), ডানো, ডিপ্লোমা (নিউজিল্যান্ড), মার্কস, চিনি, আলু, কাঁচা মরিচ, লম্বা বেগুন এর দাম বেড়েছে।
আবার সয়াবিন তেল (বোতল), মুগ ডাল (মানভেদে), অ্যাংকর ডাল, পেঁয়াজ (দেশি), শুকনা মরিচ (দেশি), হলুদ (দেশি), গরু, ফ্রেশ, ডিম (ফার্ম), এম এস রড (৬০ গ্রেড), এম এস রড (৪০ গ্রেড) এর দাম কমেছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম অপরিবর্তীত রয়েছে বলেও জানিয়েছে সরকারের এই সংস্থা।