লেবাননজুড়ে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় শতাধিক নিহত

টুইট ডেস্ক: লেবাননজুড়ে ইসরায়েলি বোমা হামলায় আরও ১০৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় প্রথমবারের মতো রাজধানী বৈরুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সেখানকার দক্ষিণাঞ্চলীয় কোলা এলাকায় হামলা চালায় দখলদার দেশটি।

লেবানন সীমান্তের কাছে সামরিক সরঞ্জামাদিসহ সৈন্যের সংখ্যা বাড়ি চলেছে ইসরায়েল। এতে দেশটিতে ইসরায়েলের সম্ভাব্য স্থল অভিযানের শঙ্কা বেড়েছে।

লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর বিমানগুলো লেবাননজুড়ে অবিরাম বোমাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে। ইসরায়েলি সৈন্যরা সামরিক সরঞ্জাম এবং যানবাহনসহ লেবাননের সীমান্তের কাছে জড়ো হওয়ায় সম্ভাব্য স্থল আক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে।

গাজা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গত এক বছর ধরে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে আন্তঃসীমান্ত লড়াই চলছে। এতে অনেক মানুষের মৃত্যু হয়েছে, যাদের অধিকাংশই হিজবুল্লাহ যোদ্ধা। এছাড়া লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

হিজবুল্লাহ বলেছে তারা হামাসের সমর্থনে কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তারা তা থামাবে না। দুটি সংগঠনই ইরান সমর্থিত। ইসরায়েল, যুক্তরাজ্যসহ আরও অনেক দেশ তাদের সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে থাকে।

সম্প্রতি গাজা থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে নজর ফেরানোর কথা জানিয়েছিল ইসরায়েল সরকার। এরপর যোগাযোগযন্ত্র পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে লেবাননের হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর ভিত নাড়িয়ে দেয় ইসরায়েল। ওই ঘটনাকে হিজবুল্লাহর ওপর বড় ধরনের হামলার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

এরই মধ্যে গত সোমবার থেকে গোটা লেবাননজুড়ে নির্বিচার হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সবচেয়ে বেশি হামলা হয় হিজবুল্লাহ অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলে।

লেবাননের গণমাধ্যম বলছে স্থানীয় সময় গত সোমবার সকাল সাড়ে ছয়টায় ইসরায়েলের বিমান হামলার প্রথম ঢেউ শুরু হয়। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের সিডন, মারজেয়ুন, নাবাটিয়ে, বিনত জেবেইল, জেজ্জিন ও জাহরানি এবং পূর্বাঞ্চলীয় বেক্কা উপত্যকার জাহলে, বালবেক ও হারমাল জেলার কয়েক ডজন শহর, গ্রাম ও খোলা জায়গাকে লক্ষ্য করে দিনভর হামলা চালায় ইসরায়েল।

দখলদার দেশটির হামলায় এখন পর্যন্ত আটশর বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। এর মধ্যে গত সোমবার একদিনেই নিহত হয়েছেন ৪৯২ জন।

ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর পাল্টাপাল্টি হামলার জের ধরে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলের এই অপরাধের জবাবে ইরান নিশ্চুপ থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচাই।

এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ১২টি দেশ হিজবুল্লাহর সঙ্গে ২১ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে তা প্রত্যাখ্যান করে ইসরায়েল। উল্টো ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার সামরিক বাহিনীকে সর্বশক্তি দিয়ে লেবাননে হামলা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।