ইসি সংস্কার কমিশন: সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

টুইট ডেস্ক: নির্বাচন কমিশন সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত কমিশনের অন্যতম প্রধান হিসেবে মনোনীত হওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার।

একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এই কমিশন গঠন শুধুমাত্র তার ব্যক্তিগত স্বীকৃতিই নয়, বরং দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার দীর্ঘদিনের সংস্কার এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার সকলের জন্য একটি বড় সুযোগ।

সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “এটি আমার জন্য একটি সম্মানজনক পদ, এবং আমাদের গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে যা সুষ্ঠু নির্বাচনের অভাবে হয়েছে। আমরা আশা করি যে, এই নতুন কমিশন সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে।”

কমিশন প্রধান উল্লেখ করেন, নির্বাচনী ব্যবস্থায় বেশ কিছু বাধা রয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাজনৈতিক দলের সহযোগিতার অভাব। তিনি বলেন, “যদি রাজনৈতিক দলগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন, কিন্তু এর সঠিক কার্যক্রমে অনেক সময় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।”

তিনি আরও যোগ করেন, “সঠিকভাবে কাজ না করলে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে বিতর্ক ও অভিযোগ বাড়ে। প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাদের যদি পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করতে দেখা যায়, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না।”

আমরা আশাবাদী যে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে পারব। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ, কিন্তু একইসঙ্গে গুরুদায়িত্বও।

নতুন কমিশন গঠনের আইন সংস্কারের পরিকল্পনা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা একটি আইন প্রণয়ন করব যা নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে গঠিত হবে।

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো একটি স্বাধীন ও গ্রহণযোগ্য কমিশন তৈরি করা।” তিনি উল্লেখ করেন, কমিশন গঠনের প্রক্রিয়ায় অন্তত তিনটি পক্ষের প্রতিনিধি রাখতে চান-প্রধানমন্ত্রীর একজন প্রতিনিধি, প্রধান বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধি এবং নাগরিক সমাজের একজন প্রতিনিধি।

এছাড়া, কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং গণশুনানির গুরুত্বকেও তুলে ধরেন। “এটি নিশ্চিত করবে যে, কমিশনে যোগ্য ব্যক্তিরা নিয়োগ পাবেন এবং যারা অবৈধভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে চান, তারা দূরে থাকবে।”

নতুন কমিশন প্রধান আশা প্রকাশ করেন, আগামী নির্বাচনের অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, “আমাদের অভিজ্ঞতা বলছে, নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সরকার থাকা দরকার। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

যদি রাজনৈতিক দলগুলো সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে, তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন, কিন্তু এর সঠিক কার্যক্রমে অনেক সময় রাজনৈতিক দলের ভূমিকা বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

তিনি আরও বলেন, “আমরা একটি রিট দায়ের করেছি যা পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের দাবি করছে। আশা করি, আদালতে আমাদের পক্ষে রায় আসবে। এটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনরায় প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।”

নতুন কমিশন প্রধানের বক্তব্যে জনগণের আশা ও প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটেছে। জনগণ এখন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী যে, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে কার্যকর করতে পারব। এটি আমাদের জন্য একটি বিরাট সুযোগ, কিন্তু একইসঙ্গে গুরুদায়িত্বও।”

এদিকে, নতুন কমিশন গঠনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে পরিবর্তন আনা জরুরি। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহযোগিতা নিশ্চিত না হলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। নতুন কমিশনকে সফল করতে হলে জনগণের আস্থা অর্জন করা অপরিহার্য।

রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে, জনগণের আশা, নতুন কমিশন তার উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে।