টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী-উপমন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগ কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু

টুইট ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে দুই টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী, এক প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপদেষ্টা তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি জানান, পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে পদ খালি হবে। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।

টেকনোক্র‌্যাট মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপদেষ্টাদের পদত্যাগের খবর রোববার গুঞ্জন ওঠে। তবে কে কে পদত্যাগ করেছে সে বিষয়ে কেউ মুখ খুলছিলো না। সচিবালয়ের এই বিষয় নিয়েই সাংবাদিকরা মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে প্রশ্ন করেন।

কতজন পদত্যাগ করেছেন এবং পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে টেকনোক্র্যাট দুই মন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপদেষ্টা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। পদত্যাগপত্র দিলেও তা কার্যকর করার জন্য একটা পদ্ধতি আছে, সেই প্রক্রিয়া আমরা শুরু করেছি। প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেই তা কার্যকর হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে দুই টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী, এক প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপদেষ্টা তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি জানান, পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর তা কার্যকর করার প্রক্রিয়া চলছে। প্রক্রিয়া শেষ হলে পদ খালি হবে। সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব তথ্য জানান।

পদত্যাগ করা মন্ত্রীরা হলেন-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলে জানান তিনি।

কোন তিন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মশিউর রহমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি, বলেন পদত্যাগ গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। সেই হিসেবে পদত্যাগপত্র জমা দিলেও সোমবার নিজ দপ্তরে অফিস করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার।

মন্ত্রী জানান, পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করা পর্যন্ত তিনি স্বপদে কাজ করবেন। পদত্যাগ পত্র কখন গ্রহণ করা হবে সেটি মন্ত্রিপরিষদের এখতিয়ার। মোস্তফা জব্বার বলেন, পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার সাথে তফসিল ঘোষনার কোনো সম্পর্ক নেই।

এদিকে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের মতোই টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন। তবে সংসদ সদস্যদের মধ্যে যারা মন্ত্রী হিসেবে আছেন তাদের স্বপদে থাকতে কোনো আইনগত বাধা নেই।

প্রক্রিয়া শেষ হতে সাধারণত কতদিন লাগে জানতে চাইলে মন্ত্রিপিরষদ সচিব বলেন, এখানে ধরা বাঁধা কোনো আইন নেই যে এতদিনের মধ্যে করতে হবে। এটার একটা প্রক্রিয়া আছে।

তারা পদত্যাগ করায় ওই পদটা শূন্য হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে নির্দেশনা কী- জানতে চাইলে মাহবুব হোসেন বলেন, সেটা এখনো হয়নি। আগে তাদের পদত্যাগ গ্রহণ হবে এবং গেজেট হবে। তারপর প্রসঙ্গটা আসবে। যেহেতু মন্ত্রণালয় ভাগ করে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার, তখন তিনি সেটা বিবেচনা করবেন।

নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা কিংবা তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টার পদত্যাগের প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মন্ত্রিপরিষদ থেকে যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া করা হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলছি। তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টার প্রসঙ্গটা হলো তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একেবারে অবৈতনিক, ওই কার্যলয় থেকে সেই সিদ্ধান্ত আসবে। বে মন্ত্রিসভার আকার আরও ছোট হবে কিনা এ ব্যাপারে কিছু স্পষ্ট করেননি সচিব।

২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগের দিন টেকনোক্র্যাট চার মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বলা হয় এবং তারা পদত্যাগপত্র জমাও দেন। বাকি মন্ত্রীরা সবাই রুটিন কাজ করে গেছেন। সেসময় যেসব মন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছিলেন, তাদের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয় এক মাস পর অর্থাৎ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরুর ঠিক আগের দিন।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের আগের সর্বদলীয় নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পুরোনো কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে বাদ দিয়ে নতুন করে ছয়জনকে যুক্ত করা হয়।

২৯ সদস্যের নির্বাচনকালীন ওই মন্ত্রিসভায় সংসদে প্রতিনিধিত্বশীল বিরোধী দল থেকেও দুইজনকে রাখা হয়। ওই মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দলটি আসেনি।

গত ৩১ অক্টোবার গণভবেনে এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমরাই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে আমাদের রুটিন ওয়ার্ক দায়িত্বপালন, দৈনন্দিন কাজকর্ম করব, যাতে সরকার অচল হয়ে না যায়, সেটা আমরা করব, সেভাবে চলবে।’

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে নির্বাচনের আগে মন্ত্রিসভা ছোট করা হলেও এবার তেমন পরিকল্পনা না থাকার কথা বলেছিলেন সরকার প্রধান।

১৪-তে আমি কিছু মন্ত্রী অন্যান্য দল থেকে নিয়োগ করেছিলাম, এরপর ১৮-তে সেই পদ্ধতি করি নাই, যেটা অন্যান্য দেশে হয়-এইবারও সেভাবে হবে, বলেন শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও ২৫ জন মন্ত্রী, ১৯ প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ উপমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা ৪৮ জন। তিনজনের পদত্যাগপত্র গৃহীত হলে সংখ্যাটি কমে ৪৫ এ দাঁড়াবে।