শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে যা লিখেছে গার্ডিয়ান

টুইট ডেস্ক: বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের অন্যতম মিত্র ছিলেন। তবে চলতি বছর আগস্টে হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের ক্ষমতায় আসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

পরিবর্তিত এই প্রেক্ষাপটে ভারত এখন একটি কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়েছে। হাসিনার দীর্ঘকালীন সমর্থক হিসেবে পরিচিত দিল্লি, এখন নতুন বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর চাপে পড়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

আগস্টের শুরুতে, যখন বাংলাদেশজুড়ে বিক্ষোভ তীব্র হয়ে ওঠে এবং রাস্তায় রাস্তায় মৃতদেহ দেখা যায়, তখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্রুত একটি হেলিকপ্টারে চড়ে ভারতের উদ্দেশে রওয়ানা দেন।

তার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সহযোগী বা সিনিয়র মন্ত্রী ছিলেন না। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি ভারতে পৌঁছে যান এবং সেই থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে ছাত্র বিক্ষোভ থেকে শুরু হয়ে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলন হাসিনার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তার সরকার আন্দোলনকারীদের ওপর কঠোর দমন-পীড়ন চালায়, ফলে শত শত মানুষ নিহত এবং হাজার হাজার মানুষ আহত হয়। এই পরিস্থিতিতে, ৫ আগস্ট হাসিনা যখন তার বাসভবন ত্যাগ করেন, তখন বাংলাদেশজুড়ে সাধারণ মানুষ উদযাপনে মেতে ওঠে।

তবে দিল্লিতে, হাসিনার পতনকে দেখা হয় বিপর্যয় হিসেবে। ভারত বহুদিন ধরেই শেখ হাসিনার অন্যতম প্রধান সমর্থক ছিল।

১৯৭৫ সালে তার পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর তাকে ভারতে আশ্রয় দেয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি ৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে পরিবারের সঙ্গে নির্বাসিত ছিলেন। দিল্লির সঙ্গে হাসিনার ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতার মাধ্যমেই বাংলাদেশকে ভারতের প্রধান আঞ্চলিক মিত্রে পরিণত করেছিলেন হাসিনা।

তবে, ভারতীয় কর্মকর্তাদের ওপর বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ উঠেছে, যা হাসিনার শাসনকালকে আরও কঠোর ও স্বৈরাচারী করে তুলেছিল।

বিরোধীরা অভিযোগ করেছে, দিল্লি হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে এবং নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে বিদেশি শক্তিগুলিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল।

এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর, হাসিনা প্রথমেই তাকে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়েছিলেন। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে, বিশ্লেষকরা মনে করছেন- ভারতকে তাদের নীতি পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করছে। তারা এই মুহুর্তে হাসিনা সরকারের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায়। নতুন সরকার দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে।