ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বসেরা অস্ট্রেলিয়া
খেলা ডেস্ক : ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ২৪০ রান করে স্বাগতিক ভারত। জবাবে ট্রাভিস হেডের অনবদ্য সেঞ্চুরিতে ছয় উইকেট হাতে রেখেই ষষ্ঠ শিরোপা জয় করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠান অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। শুভমান গিলকে নিয়ে ঝড়ো গতিতে শুরু করেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। ৪ ওভারে দলকে ৩০ রান এনে দেন রোহিত-গিল।
ভালো শুরুর পর পঞ্চম ওভারে দলীয় ৩০ রানে বিচ্ছিন্ন হয় উদ্বোধনী জুটি । পেসার মিচেল স্টার্কের করা পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে পুল শট খেলতে গিয়ে মিড অনে এডাম জাম্পাকে ক্যাচ দেন জুটিতে ৭ বল খেলে মাত্র ৪ রান করা গিল।
গিল ফিরলেও দ্রুত রান তোলার কাজটা স্বাচ্ছেন্দ্যে করেছেন রোহিত ও তিন নম্বরে নামা বিরাট কোহলি। স্টার্কের করা সপ্তম ওভারে উইকেট ছেড়ে ছক্কা মারতে গিয়ে কভার পয়েন্টে ট্রাভিস হেডের দারুন ক্যাচে বিদায় ঘটে ৪৭ রান করা রোহিতের। দ্বিতীয় উইকেটে রোহিত-কোহলি ৩২ বলে ৪৬ রান যোগ করেন।
অধিনায়কের বিদায়ে উইকেটে এসে বাউন্ডারিতে রানের খাতা খুলেন গত দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা শ্রেয়াস আইয়ার। তবে আইয়ারকে এবার ৪ রানে থামিয়ে দেন প্যাট কামিন্স। পাঁচ রানের ব্যবধানে রোহিত ও আইয়ারকে হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।
১১তম ওভারে দলীয় ৮১ রানে ভারতের তিন ব্যাটার প্যাভিলিয়নে ফেরার পর জুটি বাঁধেন কোহলি ও লোকেশ রাহুল। উইকেট পতন ঠেকাতে সাবধানে খেলতে থাকেন তারা। অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও পরিকল্পনামাফিক ফিল্ডিংয়ে দেখেশুনে খেলতে হয়েছে কোহলি ও রাহুলকে।
এ সময় ৯৭ বল চার-ছক্কার দেখা পায়নি ভারত। এ অবস্থাতেই ২৬তম ওভারে ওয়ানডেতে ৭২তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান ৫৬ বল খেলা কোহলি।
হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি কোহলি। কামিন্সের বলে ইনসাইড এজ হয়ে বোল্ড আউট হওয়ার আগে ৬৩ বল খেলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন কোহলি। চতুর্থ উইকেটে ১০৯ বলে ৬৭ রান যোগ করেন কোহলি-রাহুল।
কোহলির বিদায়ে উইকেটে আসেন রবীন্দ্র জাদেজা। আবারও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন রাহুল ও জাদেজা। ৩৫তম ওভারে অর্ধশতক পূর্ণ করেন রাহুল।
রাহুলের অর্ধশতকের পর জাদেজার উইকেত তুলে নেন পেসার জশ হ্যাজেলউড। ২২ বলে ৯ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন জাদেজা। রাহুল-জাদেজা জুটি ৪৪ বলে ৩০ রান যোগ করেন।
এরপর সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে ৪১তম ওভারে ভারতের রান ২শতে নেন রাহুল। দলের ২শতে পৌঁছানোর ওভারেই বিদায় নেন রাহুল। স্টার্কের অফ স্টাম্পের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। ১০৭ বল খেলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেন রাহুল। সূর্য-রাহুল ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে ২৫ রান যোগ করেন।
দলীয় ২০৩ রানে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে রাহুল ফেরার পর শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার খেলে সব উইকেট হারিয়ে ২৪০ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। শেষ দিকে সূর্য ১৮, কুলদীপ ১০, মোহাম্মদ সিরাজ অপরাজিত ৯, মোহাম্মদ সামি ৬ ও জসপ্রিত বুমরাহ ১ রান করেন।
অস্ট্রেলিয়া হয়ে স্টার্ক তিনটি, হ্যাজেলউড ও কামিন্স ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পা।
এই বিশ্বকাপে মোট ২৩ উইকেট শিকার করলেন জাম্পা। এর মাধ্যমে বিশ্বকাপের এক আসরে স্পিনার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারে শ্রীলংকার মুত্তিয়া মুরলিধরনের রেকর্ড স্পর্শ করলেন জাম্পা।
২৪১ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দুই ভারতীয় পেইসার জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ শামির বোলিংয়ে ৪৭ রানে ৩ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ওয়ার্নার, স্মিথ ও মার্শ ফিরে যান পাওয়ার প্লের মধ্যেই।
টপ অর্ডারকে স্বল্প রানে হারালেও, চতুর্থ উইকেটে ট্র্যাভিস হেড ও মারনাস ল্যাবুশেইনের জুটিতে বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়া।
ট্র্যাভিস হেডের পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি ও ল্যাবুশেইনের ফিফটিতে সহজ জয় নিশ্চিত হয় অস্ট্রেলিয়ার। ৪২ বল অক্ষত রেখে ৬ উইকেটের জয়ে ষষ্ঠ বিশ্বকাপ শিরোপা নিশ্চিত করে অজিরা।
হেড ১৩৭ রান করেন। ল্যাবুশেইন ৫৮ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের হয়ে বুমরাহ দুই উইকেট এবং সামি ও সিরাজ নেন একটি করে উইকেট।