রাবিতে মুহুর্মুহু বোমা বিষ্ফোরণ, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নবঘোষিত ছাত্রলীগ কমিটির বিলুপ্তি চেয়ে দু দিন ধরে আন্দোলন করছেন পদবঞ্চিত নেতারা। রোববার ও সোমবার দিনভর বিক্ষোভ, আবাসিক হলে ভাঙচুর, দলীয় নেতাকে মারধর, শো-ডাউন ও হাতবোমার বিষ্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে যেকোনো সময় বড় সংঘর্ষ আশঙ্কায় নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে ভুগছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার দিনভর পদবঞ্চিতরা ক্যাম্পাসে শোডাউন করেছেন। রাতে বঙ্গবন্ধু ও মাদারবখশ হলসহ বেশ কয়েকটি স্থানে বোমা বিষ্ফোরণ করা হয়েছে। আগের দিন রবিবার নতুন সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের কক্ষ ভাঙচুর করা হয়। আগের কমিটির সহ-সম্পাদক আরব হোসেনকে মারধর করেন সাবেক সহ-সভাপতি কাজী লিংকন। পরে রাতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হলে একাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ করা হয়।

মাদার বখশ হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, রাতের খাবার খেয়ে হলের দিকে ঢুকছিলাম। এমন সময় কয়েকটা বাইকে ২০/২৫ জন এসে বোমা বিষ্ফোরণ করলো আমার সামনেই। তারপর থেকে আমার শরীর কাঁপছে, ভয় লাগছে।

পদবঞ্চিত নেতারা বলছেন, নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনেই অছাত্র ও এই কমিটি বিতর্কিত। অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কমিটির বিলুপ্তি চেয়ে আন্দোলন করছেন আগের কমিটির সহ-সভাপতি কাজী আমিনুল হক লিংকন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শাহিনুল সরকার ডন, উপধর্মবিষয়ক সম্পাদক তাওহীদুল ইসলাম দুর্জয়, ছাত্রলীগ নেতা অনিক মাহমুদ বণি ও সাকিবুল হাসান বাকি প্রমুখ।

এদিকে, নতুন দায়িত্ব পাওয়া সভাপতি ও সম্পাদক এখন ক্যাম্পাসে নেই। অন্যদিকে তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে না দিতে পদবঞ্চিত নেতারা মারমুখী অবস্থানে রয়েছেন। এই অবস্থায় ক্যাম্পাসে সংঘর্ষের আশঙ্কায় আতঙ্কিত সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানিয়েছেন।

সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু বলেন, এভাবে ভাঙচুর, নেতাকর্মীদের মারধর ও বোমা বিষ্ফোরণ করে ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ মোটেই কাম্য নয়। কোনোভাবেই ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম মেনে নেয়া হবে না। আমাদের অভিভাবক জননেতা খায়েরুজ্জামান লিটন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনায় আমরা ক্যাম্পাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।

প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থানে আছি। বিভিন্ন স্থানে টহল দিচ্ছি। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ অবস্থান করছে। আমরা সতর্ক আছি যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

প্রসঙ্গত, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের ২৬তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রায় এক মাস পর গত ২১ অক্টোবর রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ৩৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে। এতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি ও আসাদুল্লা হিল গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।