হরতাল শুরুর আগে ট্রেনে আগুন, আহত ১০

টুইট ডেস্ক : বিএনপির ডাকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরুর আগে জামালপুরের সরিষাবাড়ী রেল স্টেশনে যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়েছে। শনিবার রাত ১টা ২০ মিনিটে এ ঘটনায় যমুনা এক্সপ্রেসের তিনটি বগি পুড়ে গেছে, লাফিয়ে নামতে গিয়ে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।

জামালপুর রেল পুলিশের এসআই মো. নাজির জানান, ঢাকা থেকে তারাকান্দিগামী আন্তঃনগর ট্রেনটি সরিষাবাড়ী রেল স্টেশন ছাড়ার পরপরই আগুন দেওয়া হয়। দ্রুত ট্রেনটি থামানো হলেও তিনটি বগিতে আগুন জ্বলতে দেখা যায়। খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভোর ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সরিষাবাড়ী ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার রুহুল আমীন জানান, আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়।

এদিকে বগিতে আগুন জ্বলতে শুরু করলে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় ট্রেন থেকে লাফিয়ে নামতে গিয়ে অন্তত ১০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে চার নারী যাত্রীকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় বলে জানান এসআই নাজির।

ওই চারজন হলেন- সরিষাবাড়ীর রুদ্র বয়ড়া এলাকার আমিনুল ইসলামের মেয়ে আশিকা সুলতানা, তারাকান্দি এলাকার জহির উদ্দিনের স্ত্রী মমতাজ , ইয়ার মাহমুদের স্ত্রী জেলি বেগম এবং সোহেল রানার স্ত্রী লাবনী আক্তার ।

সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. ফাহমিদা বলেন, আহতদের মধ্যে দুই জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, বাকি দুজনকে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সরিষাবাড়ী রেল স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুস সালাম বলেন, লাইন ক্লিয়ার দেওয়ার পরে ট্রেনটি তারাকান্দির দিকে যাওয়ার সময় মানুষের চিৎকার শুনে গিয়ে দেখতে পাই ট্রেনের ক, গ এবং আরেকটি বগি আংশিক জ্বলছে। পাঁচ দফা অবরোধের পর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে সারা দেশে বিএনপির ৪৮ ঘণ্টা হরতাল শুরু হয়েছে রোববার সকালে।

বিএনপি-জামায়াত ও সমমনা দলগুলোর ডাকা হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই যানবাহনে আগুন দেওয়া হচ্ছে। আর ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটল এ নিয়ে দ্বিতীয়বার।

যমুনা এক্সপ্রেসের পরিচালক মাসুদ মিয়া জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেনটি ১৪টি বগি নিয়ে রাত ১টা ৫ মিনিটে সরিষাবাড়ী স্টেশনে এসে পৌঁছায়।

স্টেশনে তিন মিনিটের মত ট্রেন দাঁড়ায়। এরপর তারাকান্দির উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার পরপরই ট্রেনের ভেতরে যাত্রীরা ধোঁয়া দেখতে পান। জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন দিলে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। আগুনে দুটি বগির পুরোপুরি এবং একটির আংশিক পুড়ে গেছে। এখন ১১টি বগি নিয়ে যমুনা এক্সপ্রেস ঢাকায় ফিরে যাবে বলে জানান মাসুদ মিয়া।

সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ এবং জামালপুরের গোয়েন্দা পুলিশ এরইমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সরিষাবাড়ী থানার ওসি মুশফিকুর বলেছেন, তারা এই নাশকতার ঘটনার তদন্ত শুরু করেছেন।

কারা ট্রেনে আগুন দিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হরতাল অবরোধ আছে যেহেতু এ ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব‌্যবস্থা নেওয়া হবে।

জামালপুর ডিবি পুলিশের ওসি কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, কী কারণে এই নাশকতা ঘটানো হয়েছে সেটি তদন্তে গোয়েন্দা পুলিশ মাঠে নেমেছে।

সরিষাবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মন্জুরুল ইসলাম বিদ‌্যুৎ বলেন, সরিষাবাড়ীর মাটিতে আর বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি হবে না, আর আমরা অপরাজনীতি করতে দেব না। সূত্র- বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম