যাদের উপর হামলার হুমকি রয়েছে তাদের আশ্রায় দিয়েছি : সেনাপ্রধান

নিজস্ব প্রতিবেদক : সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, এ সরকার কিছু সংস্কার করতে চাচ্ছে, একটি অবাদ নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চাচ্ছে। সেটার জন্য যত ধরণের সহযোগিতা এ সরকার চাইবে সেটা আমরা দিব। মঙ্গলবার বিকেলে রাজশাহী সেনানীবাসে ব্রিফিংয়ে এ সব কথা বলেন তিনি।

সেনা প্রধান বলেন, পুলিশের কাছ থেকে লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার জরুরী। অনেকগুলো উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার অভিযান চলছে। আশা করি সেগুলোও উদ্ধার হয়ে যাবে।

ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে এসেছে। আমি বলবো যে পরিস্থিতি এখন আমাদের নিয়ন্ত্রণে। এটার জন্য আমরা সবাই কাজ করেছি। আপনারাও আমাদের সাহায্য করেছেন এ জন্য আমরা আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

তিনি বলেন, পুলিশ কিছু টামার মধ্যে আছে। এই টমাটা কাটিয়ে উঠলে পুলিশ তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারবে। পুলিশ বিভিন্ন থানায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। এটা একটা ভাল জিনিস। আমরা পুলিশকে প্রটেকশন দিয়ে যাচ্ছি। তারা সম্পন্নভাবে যখন কাজ শুরু করে দিবে; যখন পরিস্থিতি আরও স্বাভাবিক হয়ে আসবে; তখন আমরা ইনশাল্লাহ সেনানিবাসে ফেরত যাব। সে পর্যন্ত আমরা থাকবো।

বিমানবন্দর বা সীমান্ত বন্দর থেকে যাদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে সেনা প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, জীবন বিপন্ন হয় ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে এমন কাউকে কাউকে আমরা আশ্রায় দিয়েছি। এবং তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন অভিযোগ থাকে মামলা হয় অবশ্যই তারা শাস্তির আওতায় যাবেন। অবশ্যই আমরা চাইবো না জুডিশিয়াল বহিভূত কোন এ্যাকশন তাদের উপর হক। বিচার বহিভূত কোন হামলা তাদের উপর হক। যাদের উপর বিচার বহিভূত হামলার হুমকি রয়েছে তাদের আমরা আশ্রায় দিয়েছি। যেই হোক, যে দলেরই হোক, যে মতেরই হোক, যে ধর্মেরই হোক। সেটা আমরা করবো।

আরোক প্রশ্নের জবাবে সেনাবাহিনীর প্রধান বলেন, ওয়ান ইলেভেনের মতো কিংবা অপারেশন ক্লিন হার্টের মতো সেনাবাহিনী কঠোর হবেনা। আমরা এই সরকারকে সর্বোতভাবে সাহায্য করবো, সরকার কিছু সংস্কার করতে চাচ্ছে এবং একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন করতে চাচ্ছে সেটার জন্য যে ধরনের যতদূর সহায়তা তারা আমাদের কাছে চাইবেন, সেটা আমরা করবো।

বর্তমান পরিস্থিতিতে বৈদেশীক কোন চাপ আছে কিনা আরেক প্রশ্নের জবাবে সেনা প্রধান বলেন, না কোন চাপ নেই। তবে মাইনোরিটি ইস্যু নিয়ে কিছু কথা বার্তা হয়েছে। ২০টি জেলায় ৩০টির মতো মাইনোরিটি রিলেটেড অরাজগতা হয়েছে। এটা অবশ্যই কাম্য না। একটা হওয়াও কাম্য না। আমরা এ বিষয়টি দেখছি এবং যারা অপরাধি অবশ্যই তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো ইনশাল্লাহ।

গোপালগঞ্জের সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, এটা অবশ্যই একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। পরিস্থিতি এখন একদম স্বাভাবিক। তাদের নেতৃবৃন্দ এসেছেন, আমাদের সাথে কথা বলেছেন। তবে যারা এই অপরাধ করেছেন, তদন্ত হবে, যারা এই অপরাধের সাথে যুক্ত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে, বিচার হবে।

এর আগে সেনা প্রধান রাজশাহীর অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আনিসুর রহমান, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বিপ্লব বিজয় তালুকদার। এছাড়াও র‌্যাব-৫ ও বিজিবির কর্মকর্তারাও এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।