প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শপথ রাত ৮টায়

ফাইল ছবি

এম. বি. আলম: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চলেছেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

আজ (৮ আগস্ট ২০২৪) সন্ধ্যা ৮টায় এই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন তিনি, যা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা এবং সামাজিক উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিত, ২০০৬ সালে ক্ষুদ্রঋণ ও ক্ষুদ্রবিত্ত ধারণার প্রবর্তনের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে একটি বিশ্বব্যাপী মডেল হিসেবে বিবেচিত।

ড. ইউনূস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুলব্রাইট স্কলারশিপ, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অফ ফ্রিডম এবং কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল অর্জন করেছেন। তিনি বিশ্বব্যাপী সাতজন ব্যক্তির মধ্যে একজন, যিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার, প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম এবং কংগ্রেসনাল গোল্ড মেডেল একসঙ্গে লাভ করেছেন।

১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামের জোবরা গ্রামে ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করে দারিদ্র্য দূরীকরণের উদ্যোগ নেন ড. ইউনূস। তিনি তার নিজের অর্থ থেকে ২৭ মার্কিন ডলার ঋণ দেন ৪২ জন মহিলাকে, যারা বাঁশের আসবাব তৈরি করতেন। এই উদ্যোগ ক্ষুদ্রঋণের ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করে এবং বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

ড. ইউনূস ১৯৯৬ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন।

ড. ইউনূস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি একটি নাগরিক কমিটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের সমর্থন সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার পরিচালনা করেন।

ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারও মন্তব্য করেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব সিদ্ধান্ত গণতান্ত্রিক নিয়মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত।

ড. ইউনূস তার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে।