হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া ইসমাইল হানিয়ার জীবনী

এম. বি. আলম: হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া নিহত হয়েছেন। ইরানের রাজধানী তেহরানে তার নিজ বাড়িতে হামলায় তিনি নিহত হন। বুধবার (৩১ জুলাই ২০২৪) এক বিবৃতিতে এমনটি জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। রয়টার্সের খবরে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি)-এর একটি বিবৃতি উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, (৩১ জুলাই ২০২৪) তারা যে ভবনে অবস্থান করছিলেন তাতে হামলা চালানো হলে হানিয়া এবং তার একজন দেহরক্ষী নিহত হন।

আইআরজিসির বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মঙ্গলবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হানিয়া তেহরানে গিয়েছিলেন।

ইসমাইল আবদুল সালাম আহমেদ হানিয়া ১৯৬২ সালের ২৯ জানুয়ারি গাজার শাতি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ফিলিস্তিনি রাজনীতিবিদ এবং হামাসের প্রধান রাজনৈতিক নেতা ছিলেন, যেটি ২০০৭ সাল থেকে গাজা উপত্যকা শাসন করে আসছে।

হানিয়া গাজার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি আরবি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন এবং ১৯৮৭ সালে স্নাতক হন।

১৯৮৯ সালে ইসরায়েল কর্তৃক গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিন বছর কারাভোগ করেন হানিয়া। মুক্তির পর তিনি হামাসের রাজনৈতিক শাখায় যোগ দেন এবং দ্রুতই সংগঠনের উচ্চপর্যায়ে চলে আসেন। ১৯৯৭ সালে হামাসের একটি অফিসের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত হন এবং পরবর্তীকালে সংগঠনের পদমর্যাদায় উন্নীত হন।

২০০৬ সালে হামাস গাজায় নির্বাচনে বিজয় লাভ করলে হানিয়া ফিলিস্তিনি স্বশাসন কর্তৃপক্ষের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তবে ২০০৭ সালে ফাতাহ-হামাস সংঘর্ষের কারণে ফিলিস্তিনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস তাকে বরখাস্ত করেন। হানিয়া আব্বাসের ডিক্রিকে স্বীকার না করে গাজায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকেন।

ইসমাইল হানিয়া ২০০৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গাজা উপত্যকায় হামাসের নেতা ছিলেন। ২০১৭ সালের মে মাসে, তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং তখন থেকে কাতারে বসবাস শুরু করেন।

২০২৪ সালের ৩০ জুলাই ইরানের রাজধানী তেহরানে একটি হামলায় ইসমাইল হানিয়া নিহত হন। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের মতে, তারা যে ভবনে অবস্থান করছিলেন সেই ভবনে হামলা চালানো হয়। এতে হানিয়া এবং তার একজন দেহরক্ষী নিহত হন।

ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুতে ফিলিস্তিন ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। হামাস তার মৃত্যুকে শহীদ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েল তার মৃত্যুকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এটি তাদের নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করেছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হানিয়ার মৃত্যুর ঘটনার প্রতি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং এর পেছনের দায়ীদের কঠোর শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।