বাউবির আলাপ: শিক্ষা ও ব্যর্থতা

এম বি আলম : গত ২০ অক্টোবর, ২০২৩ তে দেশের একমাত্র দূরশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। বাউবি এই মূল ক্যাম্পাস গাজীপুরের বোর্ড বাজারে উদ্‌যাপন করেছিল স্বস্তি ও জীবন্ত বাতাসে। এই দিনে সৃষ্টিকারী বাউবির শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।

তবে, কিছু ক্ষেত্রে বাউবি হারানোর দুঃখ অনুভব করছে। বিশেষভাবে সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুল পরিচালিত ৪ বছরের আইন অনার্স প্রোগ্রামে কিছু সময়ের মধ্যেই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে। পূর্বে আইন অনুষদ ছিল, কিন্তু কোন কারণে এটি স্থগিত হয়ে গিয়েছে এবং আইন অনুষদ সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীনে চালু হয়েছে।

বাউবির আইন প্রোগ্রামটি একমাত্র বিষয় যেখানে দুটি ব্যাচ চলছে রবি-বুধ ব্যাচ নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য এবং শুক্র-শনি ব্যাচ অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য।

নিয়মিত শিক্ষার্থীরা আশার সাথে আইন প্রোগ্রামে ভর্তি হন, যাতে তারা স্নাতক শেষ করে বিজেএস, বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সত্যি যে, আইন প্রোগ্রামের প্রতিটা শিক্ষার্থী এখন নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত।

সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুল পরিচালিত আইন প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের সেশনজট সমস্যার নিরসন, আইন অনুষদ চালু, সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া, নির্ধারিত সময়ে ফলাফল ঘোষণা, মাত্রাতিরিক্ত সেমিস্টার ফি কমানো বিষয়ে উপাচার্য, প্রো-উপাচার্য, ডিন সঙ্গে বারবার আলাপ-আলোচনা করে একটা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানালেও কোনো ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না । এই সকল সমস্যা সমাধানের দিকে বাউবি কি সত্যিই মনোনিবেশ করছে।

দুইটা ব্যাচের শিক্ষার্থীরা এখন অস্তিত্বের জন্য দাবি করছে, একটি শোকজ অবস্থা যাতে কোনো ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষার্থী পরিস্থিতির বাহুল্যে দলিল না হয়। শিক্ষার্থীদের এই আক্ষেপ ও চিন্তা বিবেচনা করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। এছাড়াও, বাউবি হতে উচ্চারিত প্রশ্নের সমাধানে তাৎপর্য নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

মনোকষ্ট নিয়ে বাউবি আইন প্রোগ্রামের শিক্ষার্থী লিটন হোসেন মিডিয়াগুলো মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে বলার চেষ্টা করেছেন “এমন অবস্থায় প্রশ্ন জাগছে – বাউবি কি বধির হয়ে গেছে? শিক্ষার্থীদের সমস্যার কথা শোনার অভাবে বাউবি কি একটি অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করছে? আইন প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীদের সমস্যা দেখলেও তা সমাধানের দিকে তার আগ্রহ কি হারিয়ে গিয়েছে? এসব প্রশ্নের জবাব কোথায়?”

আমাদের আশা যে, বাউবি তার আলোচনায় আসবে, শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের দিকে মোড় নেবে এবং একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তার দৃষ্টি তুলবে। বাউবি হতে আশীর্বাদ হোক শিক্ষার্থীদের জন্য, এবং তার বধিরতা ও অন্ধত্ব শীঘ্রই ভাঙতে সাহায্য করুক।