শিথিল কারফিউতে সিএনজি-রিকশায় ভাড়া লাগামহীন

টুইট ডেস্ক : টানা তিনদিন সরকারি ছুটির পর সীমিত পরিসরে খুলেছে অফিস-আদালত। এই তিনদিনে ৩ ঘন্টা করে কারফিউ শিথিল থাকলেও বুধবার (২৪ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ৭ ঘন্টা শিথিল করা হয়েছে কারফিউ। এতে সরকারি ও বেসরকারি অফিস খোলায় অফিসগামী ও অফিস ফেরত যাত্রীদের চলাচল বেড়েছে।

অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আটতে থাকার পর ঢাকায় ফিরছেন। যার ফলে সড়কে বেড়েছে যাত্রীর চাপ। পর্যাপ্ত গণপরিবহন না থাকায় অফিসগামী ও অফিস ফেরত যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। এতে সিএনজি ও রিকশায় মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা আরমান হোসেন ইমাদ পরিবহনের বাসে চেপে খুলনা থেকে গুলিস্তান নেমেছেন দুপুরে। টানা ৬ দিন আটকে ছিলেন তিনি। ঢাকায় নেমে অফিসের উদ্দেশে সিএনজি ঠিক করতে গেলে তার কাছে চালক গুলিস্তান থেকে মিরপুরের ভাড়া দাবি করেন ৫০০ টাকা। যে ভাড়া আগে ছিল ২৫০-৩০০ টাকা।

আরমান বলেন, ‘পারিবারিক কাজে খুলনা গিয়ে কারফিউ ও ছাত্রদের আন্দোলনে আটকা পড়েছিলাম ৬ দিন। আজকে ৭ ঘন্টার কারফিউ শিথিল হওয়ায় ও অফিস থেকে কাজে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়ায় ঢাকায় আসলাম।

বাস থেকে নেমেই দেখি চারপাশে শুধু সিএনজি। ভাড়া ঠিক করতে গেলে নির্ধারিত ভাড়ার দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছেন চালকরা। ৬/৭ টা সিএনজি চালককে ভাড়ার বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি। কেউই ৫০০ টাকার নিচে মিরপুরে যেতে রাজি হচ্ছেন না।

এ বিষয়ে কথা হয় সিএনজিচালক আবদুর রহিমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভাড়া বেশি না নিয়ে উপায় আছে ভাই। অনেক রাস্তা বন্ধ। গণভবনের রাস্তায় ব্যরিকেড দেয়ায় মোহাম্মদপুর হয়ে ঘুরে যেতে হবে। তাই ৫০০ টাকার নিচে পোষাবে না। তাছাড়া কারফিউর জন্য গত ৩ দিন ধরে গাড়িও বের করতে পারি নাই। আমাদেরও তো সংসার চালাইতে হবে।

এদিকে বাংলামোটর এলাকায় দেখা যায়, শুধু সিএনজি নয়, রিকশার ভাড়াও বেড়েছে বহুগুণ। সেন্ট্রাল হাসপাতালে আগে যেখানে ৫০ টাকায় যাওয়া যেত, সেখানে ভাড়া দাবি করা হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।

এ বিষয়ে কথা হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাসিবের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমার মা অসুস্থ। তাকে চেকআপের জন্য প্রায়ই ডাক্তারের কাছে যেতে হয়।

এ কয়দিন কারফিউ থাকায় ভয়ে বের হইনি। আজকে হঠাৎ মা অসুস্থ বোধ করায় বের হয়ে রিকশা ঠিক করতে গিয়ে দেখি ভাড়া অনেক বেশি চাচ্ছেন রিকশাচালকরা। ৪০ থেকে ৫০ টাকার ভাড়া চাওয়া হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। এটা কোনো কথা!’

কারফিউ শিথিল হওয়ায় বেলা ১১টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বিভিন্ন অফিস খোলা ছিল। এতে যাত্রীদের ভিড় বেড়েছে। সেই তুলনায় গণপরিবহণ সেভাবে বের হয়নি। কিছু কিছু এলাকায় অবশ্য সকাল থেকে তীব্র যানজটেরও সৃষ্টি হয়েছে।

যানজটের কারণেও অনেকে দ্রুত গন্তব্যে যেতে সিএনজি ও রিকশা ব্যবহার করেছেন। গণপরিবহন না পাওয়ায় এবং যানজটের কারণে অফিসগামী ও অফিসফেরত যাত্রীরা বিপদে পড়েছেন। কখন পৌঁছাতে পারবেন তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় ছিলেন তারা।