ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আজই মিছিলের ঘোষণা

হেমলেট পরে লাঠিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ । ছবি : সংগৃহীত

টুইট ডেস্ক: ঢাকা, ১৫ জুলাই – ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে আজই ক্যাম্পাসে মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছেন কোটা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

নাহিদ ইসলাম জানান, “আমাদের আন্দোলন চলবে। চিকিৎসা শেষে আজকেই ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে মিছিল বের করবো।”

এর আগে, ঢাবি উপাচার্য ভবনের সামনে ছাত্রলীগের হামলায় অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়ায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে, এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রায় ১৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমাদের আন্দোলন দমন করার জন্য ছাত্রলীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছে।”

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে আজ দুপুর থেকে ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়।

ছাত্রলীগের এ হামলায় আহত অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমবেত হয়। আন্দোলন চলাকালীন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হেমলেট পরে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলায় সায়মা আফরোজ, শাহিনুর সুমি, সুমাইয়া সাইনা, সানজিদা হক ও স্কাইয়া ইসলামসহ ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রায় ১৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আমাদের আন্দোলন দমন করার জন্য ছাত্রলীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে হামলা করেছে।”

ছবি: সংগৃহীত

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, “ঢামেকের জরুরি বিভাগে আহতদের চিকিৎসা চলছে।”

ভুক্তভোগীদের মতে, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা, সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা, এবং ছাত্রলীগ নেত্রী আয়শা ইসলাম মীম, কল্পনা ও জেরিন আক্তারসহ ৪০-৫০ জন নেতা-কর্মী।

আহত সায়মা আফরোজ বলেন, “শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কার আন্দোলনে যেতে না পারে সে জন্য ছাত্রলীগ হলে হলে বাধা দেয়। পরে আমরা মিছিল নিয়ে বের হলে বকুলতলায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করে। হামলার পরেও আমরা দমে যাইনি।”

তামান্না জেসমিন রিভা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা হামলা করেছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমরা নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসে ছিলাম। ছাত্রফ্রন্টের কিছু চিহ্নিত নেতা-কর্মী আমাদের মেয়েদের ওপর হামলা করে এবং আমাদের ওপর অভিযোগ দিচ্ছে।”

এই বিষয়ে জানতে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফেরদৌসী বেগমকে ফোন দেওয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

উল্লেখ্য, কোটাব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে রয়েছেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা।