পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই আড়ি পাতার বৈধতা পেল

টুইট ডেস্ক : পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী পরিচালিত গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সকে (আইএসআই) টেলিফোন ও মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার অনুমতি দিয়েছে সরকার। দেশটির আইনমন্ত্রী আজম নাজিম তারার বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তবে তারার বলেছেন, কেবল অপরাধী ও সন্ত্রাস-নাশকতার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ফোন ট্র্যাক করতে পারবে আইএসআই। এর বাইরে যদি কারো ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা ঘটে, সেক্ষেত্রে সরকার পদক্ষেপ নেবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বুধবার পার্লামেন্টে বক্তব্য দেওয়ার সময় এ প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এই বিধি জারি করা হয়েছে। যদি কেউ এই বিধির অপব্যবহার করেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

গত ৮ তারিখ পাকিস্তানের তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় নিরাপত্তা এবং যে কোনো ধরনের সম্ভাব্য সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে পাকিস্তানের সরকার কর্মকর্তাদের ফোনকল ও ক্ষুদে বার্তা (মেসেজ) ট্র্যাক করার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সরকার সন্তুষ্ট চিত্তে এই অনুমতি দিয়েছে। ।চিঠিটির একটি অনুলিপি বার্তাসংস্থা রয়টার্সের কাছে আছে।

এদিকে, আজম নাজিম তারার বুধবার পার্লামেন্টে সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানানোর পরপরই তার প্রতিবাদ করেছে দেশটির প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের প্রতিষ্ঠা করা এই দলটির জ্যেষ্ঠ ওমর আইয়ুব খান বলেন, এজেন্সির (পাকিস্তানে আইএসআই সাধারণভাবে এজেন্সি নামে পরিচিত) কর্মকর্তারা এই আইন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে নয়, বরং আইনপ্রণেতা ও জনপ্রতিনিধিদের ওপর প্রয়োগ করবেন— এমন আশঙ্কাই বেশি।

পাকিস্তানের সুশীল সমাজ ও সাধরণ নাগরিকদের মধ্যেও নতুন এই আইন নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেক নাগরিক সরকারের এই সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

মানবাধিকার সংস্থা ‘বোলো ভি’র কর্মকর্তা ফারিয়া আজিজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে এ সম্পর্কে লিখেছেন, ‘সংবিধান ও মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো আইন কীভাবে বৈধ হয়? এ প্রসঙ্গে আইএসআইয়ের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে সংস্থাটির কোনো মুখপাত্র মন্তব্য করতে চাননি।

আইএসআই পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ও প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা। সাবেক ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির সেনাধ্যক্ষ রবার্ট কৌথেম ১৯৪৮ সালে এই সংস্থাটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে এই সংস্থাটির প্রভাব প্রায় সীমাহীন। এই সংস্থাটি কার্যত পাকিস্তানের সরকার পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখে।