রাশিয়াকে মোকাবিলায় কয়েকশ বাঙ্কার বানাচ্ছে ৩ দেশ

টুইট ডেস্ক : ইউক্রেনে রুশ হামলার পর থেকেই নিরাপত্তার প্রশ্নে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ভয় ঢুকে গেছে। তাই রাশিয়ার আগ্রাসন থামাতে বিভিন্নভাবে একজোট হওয়ার চেষ্টা করছে তারা। এবার তিনটি বাল্টিক দেশ এক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

দেশ তিনটি রাশিয়ার হুমকি মোকাবিলায় কয়েকশ’ বাঙ্কার বানানোর পরিকল্পনা করছে। কয়েক মাস আগেই একটি বাল্টিক ডিফেন্স জোন বানানোর ব্যাপারে সম্মত হয় ওই তিন দেশ।

ইউরোপকে গিলে খাচ্ছে যুদ্ধ। রাশিয়া-ইউক্রেনের এই বিবাদ টেনে নিয়েছে পুরো বিশ্বকে। সাপ্লাই চেইন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি বড় ধরনের হামলা-পাল্টা হামলার মতো আতঙ্কে ভুগছে ইউরোপের ছোট ছোট দেশগুলো। এসব দেশ সামরিক শক্তিতে অতটা বলীয়ান না হওয়ায় যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। আর তাই নিজেদের সুরক্ষায় অভিনব পথ খুঁজে নিচ্ছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ।

কয়েক মাস আগে এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো। জানুয়ারিতে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া ও এস্তোনিয়া একটি কমন বাল্টিক ডিফেন্স জোন গঠনের ব্যাপারে একমত হয়েছে। রাশিয়া ও বেলারুশের সীমান্তে এই ডিফেন্স জোন গঠন করা হবে। এই অঞ্চলে নিরাপত্তা উদ্বেগ বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয় দেশ তিনটি।

নিজের পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রন্টিয়ারে ‘অ্যান্টি-মবিলিটি ডিফেন্স ইন্সটলেশনের’ ব্যাপারে একমত হয়েছে তিন দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। রুশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত টেলিভিশন নেটওয়ার্ক আরটি জানিয়েছে, রাশিয়ার সীমান্তের সঙ্গে ২৯৪ কিলোমিটারজুড়ে একটি সুরক্ষা লাইন তৈরি করতে প্রটোটাইপ বাঙ্কারের পরীক্ষা চালানো শুরু করেছে এস্তোনিয়া। এই প্রকল্পের আওতায় ৬০০ বাঙ্কার বানানো হবে। এতে খরচ হবে ৬৫ মিলিয়ন ডলার।

বাঙ্কারের চূড়ান্ত নকশা এখনও ঠিক করতে পারেনি এস্তোনিয়ার সরকার। বর্তমানে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মডেল নিয়ে বিবেচনা করছে দেশটি। আগামী সেপ্টেম্বরে ১৫৫ মিলিমিটার গোলা নিক্ষেপের মাধ্যমে ওই প্রোটোটাইপগুলোর পরীক্ষা চালাবে এস্তোনিয়ার ডিফেন্স ফোর্সেস। সরকারি জমিতেই এই বাঙ্কার বানাতে চায় দেশটি। তবে প্রয়োজনে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মালিকদের সঙ্গেও কথা বলবে এস্তোনিয়ার কর্তৃপক্ষ।

সীমান্ত এলাকায় বাঙ্কারের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে জোর দিয়ে বলেছেন এস্তোনিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হানো পেভকার। তিনি বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ দেখিয়েছে যন্ত্রপাতি, গোলাবারুদ ও জনশক্তির পাশাপাশি এস্তোনিয়াকে সীমান্তের প্রথম মিটার থেকেই রক্ষায় আমাদের প্রতিরক্ষা অবকাঠামোরও প্রয়োজন আছে। প্রতিটি বাঙ্কারে ১০ জন করে সেনাসদস্য থাকতে পারবে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম ইআরআর। আগামী বছরের শুরুর দিকে এই বাঙ্কার তৈরির পরিকল্পনা করছে এস্তোনিয়ার সরকার।

লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া এই কমন ডিফেন্স জোনে কীভাবে অবদান রাখবে তার বিস্তারিত এখনো জানা যায়নি। তবে লিথুয়ানিয়ার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরভিডাস আনুসসকাস জোর দিয়ে বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে তারা যে হাইমারস রকেট ব্যবস্থার উন্নয়ন করছে, তা তাদের প্রতিরক্ষা কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ হামলার আশঙ্কা করলেও রাশিয়া জোর দিয়ে বলেছে তাদের এমন কোনো পরিকল্পনা নেই।