৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি: নাবিল গ্রুপের ১১ কোম্পানিকে দুদকে তলব

ছবি: সংগূহীত

টুইট ডেস্ক: ইসলামী ব্যাংকের ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির ঘটনাটি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও নাবিল গ্রুপের ১১টি কোম্পানিকে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একাধিক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

২০২২ সালে ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের তিনটি শাখার মাধ্যমে বিতরণ করা প্রায় ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার বেনামি ঋণের তথ্য পাওয়া যায়। ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স, সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্ট এবং মুরাদ এন্টারপ্রাইজকে এই ঋণ দেওয়া হয়। কিন্তু, ঋণের নথিপত্রে যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে এসব প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।

সম্প্রতি, নাবিল গ্রুপ রাজশাহীতে আরও একটি ব্যাংক থেকে ৫০ কোটি টাকার ঋণ উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামী ব্যাংকের ছাড়কৃত ঋণের বিপরীতে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো সরেজমিনে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনের সময় পর্যন্ত তিন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ২ হাজার ৬১০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আগের দায় সমন্বয় করতে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।

ইসলামী ব্যাংকের এমডির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা থেকে সেঞ্চুরি ফুড প্রডাক্ট, জুবিলী রোড শাখা থেকে ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্স এবং চাক্তাই শাখা থেকে মুরাদ এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে বিনিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুকূলে নির্বাহী কমিটির ১৯৫৯তম সভায় বিনিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছিল।

এসব বিনিয়োগের মেয়াদ ইতিমধ্যেই অতিক্রম করায় বকেয়া স্থিতি অবিলম্বে ১৫ দিনের মধ্যে আদায় করতে হবে। যদি আদায় করা না যায়, তাহলে ক্ষতিজনক অর্থাৎ খেলাপি করে জানাতে হবে। এছাড়া, বিনিয়োগ সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ, অনুমোদন এবং সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ার সঙ্গে জড়িত সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও চিঠিতে উল্লেখ ছিল।

সম্প্রতি, নাবিল গ্রুপ আরও একটি ব্যাংক থেকে ৫০ কোটি টাকার ঋণ উত্তোলন করেছে বলে জানা গেছে। এই সমস্ত ঘটনা নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন আরও বিস্তারিত তদন্ত করছে।

ব্যাংকিং সেক্টরের স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ঋণ জালিয়াতির এমন ঘটনা ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি জনগণের বিশ্বাস এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। দুর্নীতি দমন কমিশন ও বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রক্রিয়া এই ঘটনাগুলির প্রকৃত সত্য উদঘাটন এবং সংশ্লিষ্ট দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।