ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমলেও ঋণ বিতরণ বেড়েছে
টুইট ডেস্ক: দেশের ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো কাঙ্ক্ষিত হারে আমানত পাচ্ছে না। অনেক গ্রাহক আগের জমানো অর্থ তুলে নিয়েছেন। এতে করে ব্যাংকগুলোর তারল্য কমে গেছে। তবে, আমানত ও তারল্য কমলেও ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণ কমেনি, বরং আরও বেড়ে গেছে। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোকে নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের করা ত্রৈমাসিক (মার্চ, ২০২৪) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, যেখানে গত বছরের ডিসেম্বর শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোতে আমানত ছিল ৪ লাখ ৩ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা, যা মার্চ প্রান্তিকে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯৯ হাজার ৫৪৯ কোটি টাকা। বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমানত কমেছে ৪ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
এদিকে, গত ডিসেম্বর শেষে দেশের পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলোর ঋণ বা বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ৪৪ হাজার ৯৭৪ কোটি টাকা, মার্চ প্রান্তিকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৯৯৪ কোটি টাকা। বছরের প্রথম প্রান্তিকে ঋণ বা বিনিয়োগ বেড়েছে ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি।
আলোচিত সময়ে ব্যাংকগুলোর তারল্য কমেছে ৭৭ শতাংশের ওপরে। ডিসেম্বরে শেষে যেখানে তারল্য ছিল ৫ হাজার ১২৫ কোটি টাকা, মার্চ শেষে তা নেমে এসেছে ১ হাজার ৫১৮ কোটি টাকায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সব মিলিয়ে গত মার্চ প্রান্তিক শেষে ব্যাংক খাতে ইসলামি ধারার ব্যাংকিংয়ে মোট আমানতের পরিমাণ ৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৫৬ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিকে ডিসেম্বর শেষে আমানত ছিল ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা। প্রান্তিকের ব্যবধানে ইসলামি ধারার ব্যাংকিংয়ে আমানত কমেছে ৩ হাজার ৯৩৮ কোটি টাকা।
ইসলামি ব্যাংকগুলোর আমানত কমলেও প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডোজগুলোতে আমানত বেড়েছে ১ হাজার ১১৩ কোটি টাকা। মার্চ শেষে প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর ইসলামি ব্যাংকিং উইন্ডোজগুলোতে আমানতের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকা। ডিসেম্বর শেষে তা ছিল ২০ হাজার ৪৩৩ কোটি টাকা।
আলোচ্য সময়ে পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর রেমিট্যান্স বাড়লেও রপ্তানি আয় কমেছে। গত মার্চ প্রান্তিকে ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ২৭ হাজার টাকা; যা ডিসেম্বরে ছিল ২৩ হাজার কোটি টাকা। এ সময় রপ্তানি আয় এসেছে ২৯ হাজার কোটি টাকা, ডিসেম্বরে যার পরিমাণ ছিল ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আলোচ্য সময়ে এসব ব্যাংকের মাধ্যমে রপ্তানি আয় ১ হাজার কোটি টাকা কম এসেছে।
রপ্তানি আয় কমলেও আমদানির দায় পরিশোধ বেড়েছে। পূর্ণাঙ্গ ইসলামি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আমদানি দায় বাবদ ৪৫ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এই অঙ্ক ডিসেম্বর প্রান্তিকে ছিল ৪২ হাজার ৩১৯ কোটি টাকা।
দেশে বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে ১০টি। ব্যাংকগুলো হচ্ছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল), গ্লোবাল ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক।