কী পরিমাণ জমি থাকলে কোরবানি ওয়াজিব হয়?
টুইট ডেস্ক : কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এটি ইসলামের একটি শিয়ার বা মহান নিদর্শন। শরয়ি দৃষ্টিকোণ থেকে সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর কোরবানি ওয়াজিব হয়। আল্লাহ তাআলা কোরবানির নির্দেশ দিয়ে বলেন— ‘আপনি আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কোরবানি আদায় করুন।’ (সুরা কাউসার: ২)
১০ জিলহজ ফজরের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত সময়ে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে তাকে কোরবানি দিতে হবে। নিসাব পরিমাণ সম্পদ বলতে বোঝায় সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ ভরি রুপা অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সব সম্পদ মিলে সাড়ে ৫২ ভরি রুপার সমমূল্যের হওয়া।
এই পরিমাণ সম্পদ কারো মালিকানায় কোরবানির দিনগুলোতে থাকলে, তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব। সরাসরি স্বর্ণ বা রুপা থাকা শর্ত নয়, বরং প্রয়োজনের অতিরিক্ত সমমূল্যের নগদ অর্থ বা বাড়ি বা ব্যবসায়িক পণ্য বা অন্যান্য আসবাবপত্র কোরবানির নিসাবের অন্তর্ভুক্ত। (তাবয়িনুল হাকায়িক, পৃষ্ঠা: ১০, খণ্ড: ৬)
জিলহজে মাসের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানির সময়। তবে সম্ভব হলে জিলহজের ১০ তারিখেই (প্রথম দিনে) কোরবানি করা উত্তম। (মুয়াত্তা মালেক: ১৮৮; বাদায়েউস সানায়ে: ৪/১৯৮, ২৩; হিন্দিয়া: ৫/২৯৫)
প্রয়োজনের অতিরিক্ত জমি থাকলে কোরবানি ওয়াজিব হয়। (আহসানুল ফতোয়া: ৭/৫০৬)
এর অর্থ হলো- জমি থাকলেই কোরবানি ওয়াজিব হয় না; বরং যে জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত, কেবল সেই জমিই কোরবানির নেসাবের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু যে জমি প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয়; বরং এর আয়ের উপর আপনার পরিবারের খরচ নির্ভরশীল, তা কোরবানির নেসাবের ক্ষেত্রে ধর্তব্য হবে না। (
রদ্দুল মুহতার: ৬/৩১২; আলবিনায়াহ: ১৪/৩৫০; ফতোয়ায়ে খানিয়া: ৬/২৮৬; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/৪৫৫; তাতারখানিয়া: ১৭/৪০৬; আলবাহরুর রায়েক: ৮/১৭৪; খুলাসাতুল ফতোয়া: ৪/৪০৯)
ব্যবসার নিয়তে জমি, গাড়ি, ফ্ল্যাট, কাপড়-চোপড়, অলংকার, নির্মাণ সামগ্রী, ফার্নিচার, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, হার্ডওয়ার সামগ্রী, বইপুস্তক ইত্যাদি কিনলে তা বাণিজ্য-দ্রব্য বলে গণ্য হবে এবং এসবের ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। (সূত্র: মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক: ৭১০৩-৭১০৪)
সম্পদের যথাযথ হিসাব করা কষ্টকর হলে আপনার সম্পদের পূর্ণ হিসাব আপনার কাছের কোনো হক্কানি আলিমের কাছে পেশ করুন। তিনি দেখে সিদ্ধান্ত দেবেন। তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ি আমল করুন। আল্লাহ কবুল করবেন ইনশাআল্লাহ।
ওয়াজিব কোরবানি আদায় না করলে, পরে গরিব হয়ে গেলেও তার ওপর কোরবানিযোগ্য ছাগল সদকা করা আবশ্যক। দরিদ্র হওয়ার কারণে কোরবানি মাফ হবে না।
সুতরাং সে আদায় করে যেতে না পারলে তা আদায় করে দেওয়ার জন্য অসিয়ত করে যেতে হবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ৫/৬৫ আল ইখতিয়ার: ৫/২০ মোবাইল শামেলা থেকে গৃহীত)