কোরবানির পশু ওজন করে বিক্রি করা যাবে?
টুইট ডেস্ক : ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি করা একটি মহান ইবাদত। এর মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা নিজের প্রতি বান্দার ভালোবাসা পরীক্ষা করেন। বান্দা একনিষ্ঠ চিত্তে আল্লাহর জন্য কতটুকু উৎসর্গ করতে প্রস্তুত তা যাচাই করে দেখেন তিনি।
আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর রক্ত মাংস কিছুই পৌঁছায় না, তার কাছে মানুষের তাকওয়া ও খোদাভীতি পৌঁছায়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
لَنۡ یَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوۡمُهَا وَ لَا دِمَآؤُهَا وَ لٰکِنۡ یَّنَالُهُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ ؕ کَذٰلِکَ سَخَّرَهَا لَکُمۡ لِتُکَبِّرُوا اللّٰهَ عَلٰی مَا هَدٰىکُمۡ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُحۡسِنِیۡنَ
আল্লাহর কাছে পৌছায় না সেগুলোর গোশত এবং রক্ত, বরং তার কাছে পৌছায় তোমাদের তাকওয়া। এভাবেই তিনি এদেরকে তোমাদের বশীভূত করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে হেদায়াত করেছেন; কাজেই আপনি সুসংবাদ দিন সৎকর্মপরায়ণদেরকে। (সূরা হজ, আয়াত : ৩৭)
কোরবানির সময় পশু জবাই করার সময় আল্লাহর সন্তুষ্টির বিষয়টি মনে রাখতে হবে। পশুর গোশত খাওয়াকে মূল উদ্দেশ্য বানানো যাবে না।
বর্তমানে পশুর হাটগুলোতে ওজন করে পশু বিক্রির প্রচলন দেখা যায়। এভাবে পশু বিক্রির কারণে তা কোরবানির মতো মহত ইবাদতের উদ্দেশ্য ব্যাহত করবে কিনা-এমন সংশয় দেখা দেয় অনেকের মনে।
এ বিষয়ে ইসলামি আইন ও ফেকাহ শাস্ত্রবিদেরা বলেন, এক সময় গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগী ইত্যাদি পশু-পাখি ওজন করে বেচা-কেনার প্রথা ছিল না।
বরং ক্রেতারা হাটে গিয়ে পশু পছন্দ করে বিক্রেতার সাথে দাম-দর করে ক্রয় করতেন। এটাই ছিল পশু-পাখি বেচা-কেনার ক্ষেত্রে সমাজের প্রাচীন রীতিনীতি। আমাদের প্রিয় নবী সা.-এর যুগেও এই নীতি ছিল।
তবে বর্তমানে পাখি; যেমন হাঁস, মুরগী ওজন করে ক্রয়-বিক্রয়ের প্রচলন শুরু হয়েছে। কয়েক যুগ আগে থেকে সারা বিশ্বে এই প্রথা চালু হয়েছে।
এরইসঙ্গে নতুন করে গরু, ছাগলও ওজন করে বিক্রির কথা শোনা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান মতে আলেমরা বলেন, যদি ক্রেতা কোনো গরু বা ছাগল পছন্দ করার পর বিক্রেতার সঙ্গে আলোচনা করে তার পছন্দের গরু-ছাগলটি কেজি প্রতি মূল্য নির্ধারণের ভিত্তিতে উভয়ে সম্মত হয়ে বেচা-কেনার চুক্তি সম্পন্ন করে, শরীয়তে ইসলামিয়ার আলোকে এই বেচাকেনা বৈধ বলে বিবেচিত হবে। যেহেতু এই বেচা-কেনা জায়েয বা বৈধ, তাই এ পদ্ধতিতে কেনা পশুর মাধ্যমে কোরবানি করাও বৈধ।
(ফাতাওয়ায়ে উসমানী, ৩/৯৯, আহসানুল ফাতাওয়া, ৬/৪৯৭)