গাজায় ‘গণহত্যায়’ মদদ ও প্ররোচনার অভিযোগে বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা

টুইট ডেস্ক : গাজায় ইযরায়েলি বাহিনীর চালানো ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ব্যর্থতা এবং এতে মদদ ও প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে অ্যামেরিকার একটি নাগরিক অধিকার সংগঠন। বাইডেনের পাশাপাশি এতে অভিযুক্ত করা হয়েছে ইউএস সেক্রেটারি অফ স্টেইট অ্যান্টোনি ব্লিনকেন ও সেক্রেটারি অফ ডিফেন্স লয়েড অস্টিনকেও।

ইযরাইলের হামলায় গাজায় সোমবার পর্যন্ত ৩৭ দিনে অন্তত ১১ হাজার ২০০ প্যালেস্টেনিয়ান নিহত হয়েছেন। এর আগে ইযরায়েলে হামাসের হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ জন।

প্যালেস্টেনিয়ান মানবাধিকার সংগঠন, গাজার প্যালেস্টেনিয়ান এবং আটকে পড়া অ্যামেরিকান নাগরিকদের পক্ষ থেকে তারা সোমবার একটি মামলা করেছেন। মামলায় বলা হয়েছে, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সেখানে চালানো ‘গণহত্যায়’ ইযরায়েলকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে অ্যামেরিকা মদদ দিয়েছে। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক সংগঠন সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটস (সিসিআর) এই তথ্য জানিয়েছে।

ইযরাইলের হামলায় গাজায় সোমবার পর্যন্ত ৩৭ দিনে অন্তত ১১ হাজার ২০০ প্যালেস্টেনিয়ান নিহত হয়েছেন। এর আগে ইযরায়েলে হামাসের হামলায় নিহত হন ১ হাজার ২০০ মানুষ।

সিসিআর তার অভিযোগের শুরুতে লিখেছে, ‘ইযরায়েল সরকারের অনেক নেতা তাদের গণহত্যার অভিপ্রায় স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছেন এবং প্যালেস্টেনিয়ানদের প্রতি অমানবিক আচরণ দেখিয়েছেন। গাজায় তারা মানবপশুদের মোতায়েন করেছেন।

সিসিআর বলেছে, গাজায় ইযরায়েলের নজিরবিহীন বোমা হামলা শুরুর পরপরই প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইযরায়েলের প্রতি ‘অবিচল’ সমর্থন দিয়েছেন। তিনি ও তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রতিনিয়তই এই সমর্থন দিয়ে আসছেন। ইযরায়েলকে অ্যামেরিকা সামরিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে আসছে। অ্যামেরিকা ইযরায়েলের সবচেয়ে কাছের মিত্র ও শক্তিশালী সমর্থক এবং সামরিক সহায়তার সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী।

সিসিআর আরও বলেছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইযরায়েলকে সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক সহায়তা দিয়েছে অ্যামেরিকা। এ কারণে ইযরায়েলি কর্মকর্তারা এখন প্যালেস্টেনিয়ানদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। অ্যামেরিকা চাইলে ইযরায়েলের ওপর প্রতিরোধমূলক প্রভাব ফেলতে পারে। তা না করে বাইডেন, ব্লিনকেন ও অস্টিন ইযরায়েলকে নিঃশর্ত সামরিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দেয়া বজায় রেখেছে। ইযরায়েলের বোমা হামলা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রচেষ্টাকেও নস্যাৎ করে গণহত্যার মতো অপরাধকে সহায়তা করছে।

সিসিআরের আইনজীবী আস্থা শর্মা পোখারেল বলেন, ‘প্রচলিত আন্তর্জাতিক আইন, ফেডারেল আইন অনুযায়ী এই গণহত্যা রোধে এবং এটিকে সমর্থন না দেয়ায় অ্যামেরিকার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব আছে। তবে বাইডেন প্রশাসন সেই চেষ্টায় বরাবরই ব্যর্থ হয়েছে। তারা ইযরায়েলকে আগলে রেখেছে এবং সেখানে আরও অর্থ ও অস্ত্র পাঠাতে চাচ্ছে।

ইযরাইলের হামলায় গাজায় পাঁচ স্বজনকে হারিয়েছেন এই মামলার অন্যতম বাদী ও অ্যামেরিকান নাগরিক লায়লা আল-হাদ্দাদ। তিনি বলেন, ‘আমি আমার চাচাতো ভাই ও খালাকে হত্যার জন্য ইযরায়েলকে অর্থ দিয়েছি… আমার দেয়া ট্যাক্স ডলারেই আমার পরিবারকে হত্যার জন্য ওই বোমাগুলো ইযরায়েলে পাঠানো হয়েছে। আর তাই আমি মনে করি আমাদের সরকার ও আমাদের নির্বাচিত কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করায় আমার ও অন্যান্য অ্যামেরিকান করদাতাদের একটি অনন্য দায়িত্ব রয়েছে।

এর আগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত- আইসিসিতে গাজা উপত্যকায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে ইযরাইলের বিরুদ্ধেও মামলা হয়েছে।