বিএনপি মুণ্ডুহীন একটা দল : শেখ হাসিনা
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের জীবন মান উন্নয়ন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। দেশে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকায় দেশে উন্নয়ন হয়েছে। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত আছে বলেই বাংলাদেশের উন্নয়নটা এখন দৃশ্যমান। আর বিএনপির কাজ হচ্ছে ধ্বংস করা আর আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারা।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত খুলনা বিভাগীয় জনসভায় এ কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুলনায় আওয়ামী সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে। তারপরও আজ যেগুলো উদ্বোধন করা হলো সেগুলো খুলনাবাসীর জন্য উপহার।
জনসভায় বিএনপি- জামায়াতের সমালোচনা শেখ হাসিনা বলেন, একটা সময় বিএনপি ক্ষমতায় এসে মোংলা বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর আবার তা চালু করেছে। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন জনগণের উন্নয়ন হয়। বিএনপির কাজই হচ্ছে ধ্বংস করা। বিএনপি মানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। আগুন দিয়ে মানুষকে পুড়িয়ে মারাই হচ্ছে বিএনপি-জামায়াতের কাজ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা দেখেছেন এই ২৮ অক্টোবর কীভাবে পুলিশকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বেহুঁশ হয়ে গেছে তাও ছাড়েনি। তারপর কুপিয়েছে। ৪৫ জন পুলিশ আহত হয়েছে। সাংবাদিকদেরও ছাড়েনি। সাংবাদিকদের তারা পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছে। রাজারবাগ পুলিশ স্টেশনে ঢুকে হাসপাতালে আক্রমণ করেছে। কয়েকটা অ্যাম্বুলেন্স ভেঙেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমার একটাই লক্ষ্য এ দেশের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। ২০০৮ সাল ২০১৪, ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছি। ধারাবাহিক গণতান্ত্রের ধারা অব্যাহত রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জানে তারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে মাত্র ৩০টা সিট পেয়েছে। তারা জানে তাদের নেতা নেই। মুণ্ডুহীন একটা দল। একটা পলাতক আসামি আরেকটা কারাগারে। সেই দল এদেশে নির্বাচন হতে দিতে চায় না। একটা অসামাজিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। দেশের মানুষ যদি ভালো থাকে সেটাই আমার পাওয়া। বাংলাদেশের জনগণই আমার পরিবার। জনগণকে পরিবার হিসেবে আমি আপন করে নিয়েছি। তাই তাদের কল্যাণের জন্য আমি কাজ করে যাচ্ছি।’
জনগণের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বারবার আমাদের ভোট দিয়েছেন। ভোট দিয়ে আপনাদের সেবার করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আর সেই সুযোগটা দিয়েছেন বলেই আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’
২২ প্রকল্প উদ্বোধন
খুলনার সার্কিট হাউস মাঠে জনসভাস্থলে পৌঁছে ২২ প্রকল্পের উদ্বোধন ও দুইটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধন করা প্রকল্পগুলো হলো- নগরের সাউথ সেন্ট্রাল রোডে একাত্তরের গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ভবন, শামসুর রহমান রোডে সিভিল সার্জনের অফিস ভবন ও বাসভবন, পাইকগাছা উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, শিক্ষানবিশ প্রশিক্ষণ দফতর সংস্কার ও আধুনিকায়ন, বিএসটিআইর ১০ তলা আঞ্চলিক অফিস ভবন, বিটাকের ১০ তলাবিশিষ্ট নারী হোস্টেল ভবন, পাইকগাছা উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবনের (সিভিল, স্যানিটারি ও বৈদ্যুতিক) কাজ, দৌলতপুরে কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের চারতলা ছাত্র হোস্টেল।
সুন্দরবনে শেখেরটেক ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বেশ কিছু ভবন, যার মধ্যে আছে ডুমুরিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চমতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবন, বয়রা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খুলনা কলেজিয়েট স্কুল, সরকারি এল বি কে ডিগ্রি মহিলা কলেজ, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজ, চালনা বাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, তালিমুল মিল্লাত রহমাতিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, নজরুলনগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং আরআরএফ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিটিতে ছয়তলা একাডেমিক ভবন, আড়ংঘাটা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন।
ডুমুরিয়া উপজেলার চরচরিয়া শিবনগর সড়কে ভদ্রা নদীর ওপর ৩১৫ দশমিক ৩০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু, খুলনা নগরে খালিশপুর বিআইডিসি রোডে ড্রেন, ফুটপাতসহ প্রশস্ত রাস্তা, নগরের দৌলতপুরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালকের ছয়তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত অফিস ভবন।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে- নগরীর মাথাভাঙ্গা এলাকায় স্যানিটারি ল্যান্ডফিল নির্মাণকাজ এবং দিঘলিয়া টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাঁচতলা একাডেমিক কাম চারতলা প্রশাসনিক ও ওয়ার্কশপ ভবনের নির্মাণকাজ।