নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোগাবে ৫ ইস্যু
টুইট ডেস্ক : দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। যে কোন সময় ঘোষণা হবে নির্বাচনের তফসিল। নির্বাচন কন্দ্রে করে সকল প্রস্তুতি চুড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তফসিল ঘোষণা হলেই নির্বাচনের অভিমুখে যাত্রা শুরু করবে দলটি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে সরকারকে অনেকগুলো কঠিন বাস্তবতা মোকাবিলা করতে হবে। সরকারের সামনে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে যে ইস্যুগুলোর সমাধান করতে না পারলে সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে সরকারের সামনে পাঁচটি কঠিন চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি আওয়ামী লীগের জন্য নির্বাচনের আগে অন্যতম বড় একটি অস্বস্তির নাম। গত কয়েক মাস ধরে চেষ্টা করার পরও সরকার দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বরং একের পর এক পণ্যের দাম লাগামহীন ভাবে বেড়ে চলছে। যা জনজীবনে দারুণভাবে প্রভাব ফেলেছে। এই দ্রব্যমূল যদি সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তাহলে নির্বাচনের আগে সরকার বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়বে।
ডলার সংকট
ডলারের সংকট রীতিমতো দেশের অর্থনীতিকে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে নিয়ে গেছে। খোলা বাজারে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না। ডলার সংকটের কারণে এমন একটি পরিস্থিতি হয়েছে যে এখন এলসি খোলা যাচ্ছে না। এতে করে রিজার্ভের চাপ আরও বাড়ছে। এই সংকট যদি সরকার সমাধান করতে না পারে তাহলে নির্বাচনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রবাসী আয়
দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসী আয় নিম্নমুখী হওয়ার কারণে অর্থনীতিতে এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। সাম্প্রতি সময়ে বাড়তি আরও আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ দেয়ার পর মাঝে প্রবাসী আয়ে কিছুটা বাড়লেও প্রত্যাশা অনুযায়ী তা এখনো বাড়েনি। শ্রমিক আন্দোলনের ফলে অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে রপ্তানি আয়ও কমবে। এর মধ্যে যদি প্রবাসী আয় না বাড়ে তাহলে সামনে দেশের অর্থনীতি আরও বড় ধরনের সংকটে পড়বে।
গার্মেন্টসে অসন্তোষ
এতদিন সরকার বিরোধী দলের আন্দোলনে চাপে থাকলেও এখন সেই চাপ নেই। কিন্তু গত দুই সপ্তাহ ধরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলনে সরকার আবার নতুন করে চাপের মুখে পড়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের এই অসন্তোষ যদি সরকার সমাধান না করতে পারে তাহলে দেশের অর্থনীতি বড় ধরনের সংকটের মুখে পড়বে। কারণ বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি হল তৈরি পোশাক খাত।
ইতোমধ্যে প্রায় শতাধিক গার্মেন্টস অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এভাবে একের পর এক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেলে অনেকে কাজ হারাবে, বেকার হয়ে যাবে। ফলে দেশে একটি নৈরাজ্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই খাতে যদি অস্থিরতা বাড়াতে থাকে তাহলে আমাদের রপ্তানি কমে আসবে। ফলে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হবে বলে আভাস দিচ্ছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা।
চোরাগোপ্তা হামলা
সাম্প্রতিক সময়ে অবরোধে প্রতিনিয়ত চোরাগোপ্তা হামলা করা হচ্ছে। এর ফলে জনমনে এক ধরনের ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। জনমনে এই আতঙ্ক নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কমিয়ে আনতে পারে। কারণ এমনিতেই আগামী নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে এক রকম আশঙ্কা রয়েছে। এরপর আবার অব্যাহত ভাবে চোরাগোপ্তা হামলা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ ভোট কেন্দ্রে ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হবে।